কমলার সঙ্গে বিতর্কে অংশ নিতে সম্মত ট্রাম্প

যুক্তরাষ্ট্রের ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিস ডেমোক্রেটিক পার্টির সম্ভাব্য প্রেসিডেন্ট প্রার্থী হওয়ার ঘোষণা আসার পর থেকেই ট্রাম্প শিবিরে একের পর ধাক্কা আসছে। জনপ্রিয়তায় কমলা এরই মধ্যে ট্রাম্পকে ছাড়িয়ে গেছেন বলে জরিপে উঠে এসেছে। তহবিল সংগ্রহেও একই অবস্থায়। সর্বশেষ কমলার বর্ণ পরিচয় নিয়ে আক্রমণ করে সমালোচনার মুখে পড়েছেন ট্রাম্প।

এ পরিস্থিতিতে রিপাবলিকান পার্টির প্রেসিডেন্ট প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্প কমলার সঙ্গে টেলিভিশন বিতর্কে অংশ নিতে অস্বীকৃতি জানান। কিন্তু অবশেষে কমলার সঙ্গে বিতর্কে অংশ নিতে সম্মত হয়েছেন ট্রাম্প। গত শুক্রবার ট্রাম্প নিজেই এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

এদিন নিজের মালিকানাধীন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ট্রুথ সোশ্যাল ট্রাম্প এক পোস্টে লেখেন, ‘কমলা হ্যারিসের সঙ্গে বিতর্ক করতে আমি ফক্স নিউজের সঙ্গে গত বুধবার সম্মত হয়েছি। ৪ সেপ্টেম্বর আমরা বিতর্কে অংশ নেব।’

শুক্রবার ট্রাম্পের এ ঘোষণার কয়েক ঘণ্টা আগে নভেম্বরে অনুষ্ঠেয় মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ডেমোক্রেটিক পার্টির দলীয় প্রার্থিতা নিশ্চিত করেছেন কমলা। ডেমোক্রেটিক পার্টির দলীয় প্রার্থী হতে কমলার প্রতিনিধিদের (ডেলিগেট) যে পরিমাণ ভোট দরকার, তিনি এরই মধ্যে তার চেয়ে বেশি পেয়েছেন। ডেমোক্রেটিক পার্টির ‘ন্যাশনাল কমিটি চেয়ার’ জেইম হ্যারিসন শুক্রবার এ ঘোষণা দেন।

সিএনএন জানায়, প্রেসিডেন্ট প্রার্থী চূড়ান্ত করার লক্ষ্যে বৃহস্পতিবার থেকে ই-মেইলে ভোট গ্রহণ শুরু করে ডেমোক্রেটিক পার্টি। সংশ্লিষ্ট প্রতিনিধিরা আগামী সোমবার সন্ধ্যা পর্যন্ত প্রার্থী বাছাইয়ে ভোট দিতে পারবেন। কিন্তু ভোট গ্রহণ শুরুর ৩৬ ঘণ্টার মধ্যে কমলা মনোনয়ন পাওয়ার জন্য তাঁর প্রয়োজনের চেয়ে বেশি ভোট পেয়ে গেছেন।

প্রতিনিধিদের ভোটে প্রার্থিতা নিশ্চিত করলেও কমলার ডেমোক্রেটিক পার্টির দলীয় মনোনয়ন চূড়ান্ত হবে দলের জাতীয় সম্মেলনে। চলতি মাসের শেষের দিকে শিকাগোতে এ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে। তবে সেটার আগেই আগামী সপ্তাহে আনুষ্ঠানিকভাবে দলীয় প্রার্থীর মনোনয়ন গ্রহণ করবেন কমলা।

মনোনয়ন নিশ্চিত করার পর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এক পোস্টে কমলা বলেন, ‘ডেমোক্রেটিক পার্টির প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন পেয়ে আমি সম্মানিত বোধ করছি। আগামী সপ্তাহে আমি আনুষ্ঠানিক মনোনয়ন গ্রহণ করব।’

এদিকে ট্রাম্প বিতর্ক করতে সম্মত হলেও এ বিষয়ে তাৎক্ষণিকভাবে কমলার মতামত জানা যায়নি। তবে কমলা এতে সম্মত হবেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।

কমলার কপাল ঘুরে গিয়েছিল গত ২১ জুলাই। এদিন ৮১ বছর বয়সী জো বাইডেন ডেমোক্রেটিক পার্টির প্রেসিডেন্ট প্রার্থীর পদ থেকে সরে দাঁড়ার ঘোষণা দেন এবং কমলাকে প্রেসিডেন্ট প্রার্থী হিসেবে সমর্থন দেন। এর পর থেকে মার্কিন প্রেসিডেন্ট প্রার্থী হিসেবে প্রথম কোনো কৃষ্ণাঙ্গ ও এশিয়ান আমেরিকান নারী হিসেবে প্রচারণা শুরু করেন কমলা হ্যারিস।

প্রেসিডেন্ট নির্বাচনকে সামনে রেখে গত জুন মাসের শেষের দিকে সিএনএন আয়োজিত প্রথম টেলিভিশন বিতর্কে ট্রাম্পের কাছে রীতিমতো ধরাশায়ী হন বাইডেন। এর পর থেকে নিজ দল, সমর্থক ও তহবিলদাতাদের পক্ষ থেকে বাইডেনের সরে দাঁড়ানোর দাবি বাড়তে থাকে। শুরুর দিকে গড়িমসি করলেও শেষ পর্যন্ত ২১ জুলাই সরে দাঁড়ানোর দেন বাইডেন।

বাইডেন প্রার্থী থাকলে ১০ সেপ্টেম্বর এবিসি টেলিভিশনে ট্রাম্পের সঙ্গে তাঁর দ্বিতীয় বিতর্ক অনুষ্ঠান হওয়ার কথা ছিল। বাইডেন সরে দাঁড়ানোর পর কমলার সঙ্গেই ট্রাম্পের এ বিতর্ক হওয়া নিয়ে আলোচনা চলছিল। কিন্তু ডেমোক্রেটিক পার্টির আনুষ্ঠানিক প্রার্থী না হওয়ায় কমলার সঙ্গে ট্রাম্পের বিতর্কে অংশ নেওয়াটা ‘যথার্থ নয়’ বলে মন্তব্য করেছিলেন তাঁর মুখপাত্র স্টিভেন চেউং।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *